''আমার বাড়ি যাইতে বন্ধু রে কার বা রাখো ডর ভাসুর আমার গা’র চকিদার শ্বশুর দফাদার রে
যাইতে যদি ইচ্ছা কর রে আমি থাকবো পথে নেচে নেচে যাইও বন্ধু আমার ঘর মাঝে রে''
নদীকে দুঃখের কথা শোনাতে আমার ভালো লাগে । ব্রহ্মপুত্র নদকে একবার বলেছিলাম মনে রাখিস রে নদ একদিন তোর উপর দিয়ে দুজনে পার হয়ে গিয়েছিলাম । হয়তো একদিন সেও থাকবে না আমিও থাকবো না কিন্তু নদ থাকবে । কেউ কোনদিন মনেও রাখবেও না একহাজার কিলোমিটার দূরের কুমার নদীর পাড়ের এক ছেলে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ের এক মেয়ের প্রেমে পড়েছিল ।
ভালবাস্রার মানুষ হারিয়ে যায় কিন্তু নদীর পাড়ের স্মৃতি রয়ে যায় । নদীর পাড়ে আমার স্মৃতি অনেক । নদীকে শোনাই আমার দুঃখের কথা । এই নদী দিয়ে আমার প্রিয়তমা একদিন পার হয়ে যাবে , যদি সে আমার কথা তাকে মনে করিয়ে দেয় !
নদীকে মনের কথা বলে মানুষ কতো গান গায় , আমার সংগ্রহে থাকা এমন কিছু করুন সুরের ধীর লয়ের ভাটিয়ালী গান , মন খারাপ থাকলে যা শুনে মন ভালো করি ।
ও ভরা ভাদরের নদী জাননি তার কথা,
হে আমার ঢেউয়ের হাতে তুলে দিয়ে,
আমার বন্ধু গেলো কোথা
ও ভরা ভাদরের নদী জাননি তার কথা
এমনি সেদিন বিকেল বেলায়, নদীর তীরে ঝাউগাছ তলায়,
দক্ষিন বায়ু সখীর দোলায় দোলে গাছের পাতা,
তখন আকাশের গায়ে আলপনা দেয়, কোন দেবদুহিতা
ও ভরা ভাদরের নদী জাননি তার কথা
আমি সেদিন আপন মনে,
করি মধুর আলাপ বধুর সনে,
মুখোমুখি সুখাসনে সুখ দুঃখের কথা,
কেন অল্পকালে শুখাইলো আমার আশাকল্পলতা
ও ভরা ভাদরের নদী জাননি তার কথা
ঢেউয়ের নাচন দুলে দুলে, ভরা নদীর কুলে কুলে,
আমি কাঁদি ফুলে ফুলে; ফুলের ভ্রমর যথা,
তোমার পূর্ণ বক্ষে বুঝবে না মোর, শূণ্য বক্ষের ব্যথা,
ও ভরা ভাদরের নদী, জাননি তার কথা
ভাঁঙা গড়ার নিত্য খেলায়; বিপুলও পুলকের মেলায়,
হাসি কান্না বন্যা মেশায় নিথর নিরবতায়,
পাগল 'বিজয়' বলে এ কোন খেলা; খেলছে বিধাতা,
ও ভরা ভাদরের নদী, জাননি তার কথা
আমার ঢেউয়ের হাতে তুলে দিয়ে
আমার বন্ধু গেল কোথা
ও ভরা ভাদরের নদী, জাননি তার কথা
‘’পোষা পাখী উড়ে যাবে সজনী একদিন ভাবি নাই মনে’’ গানটি ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি । গানকে আমি কতো ভালবাসি নিজেই জানি না । ছোটবেলায় রেডিও ছেড়ে দিয়ে গান শুনতাম আর পড়তাম । গান মনে হয় আমার বেঁচে থাকার অক্সিজেন । বিচ্ছেদ গান সে তো সব সময় আমি শুনি না , যখন মন খারাপ থাকে তখন শুনি । ‘পোষ মানা পাখি যখন অচেনা হয়ে যায়, মনকে তখন বোঝানোর কিছু থাকে না । তবে হ্যাঁ , যেদিন থেকে জেনেছি , ‘আমি ছাড়া পৃথিবী চলে’ সেদিন থেকে কোন কিছুতেই আর মন খারাপ করি না । পাখি যাবে তো কি ? যাক , ছেড়ে যখন দিয়েছি মানা করে কি লাভ ? তারপরেও পাখির জন্য মন খারাপ হলে গান শুনে মন ভালো করতে চেষ্টা করি । কিছু গান সেই পোষ মেনে উড়ে যাওয়া পাখির জন্য
১। পোষা পাখী উড়ে যাবে সজনী একদিন ভাবি নাই মনে - বিজয় সরকার
২। ওরে আমার সোনার ময়না পাখি রে
ও তুই কোন ফাঁকে পালায়ে গেলি
আমার দিয়ে ফাকি রে
বিজয় সরকার
৩ । শিকলি কাটা পাখি পেয়ে সইরে তারে ধরে রেখেছি ।
পাখির রূপ দেখিয়া ভুলে গিয়েছি ।
আমার ছিল কাঞ্চন পিঞ্জর ছিল বাইশ খুঁটির ঘর ,
পাখি থাকিত তার ভিতর
-প্রফুল্লরঞ্জন
৪। সেই শিকলি কাটা পাখির খোঁজে সজনি আমি যাবো কাননে ।
মন হলো মোর উতলা আকুলরে সেই পাখিটার কারনে ।
- প্রফুল্লরঞ্জন
৫। ক্ষ্যাপা তোর তোর সোনার খাঁচায় ময়না পাখি
কোনদিন যেন পালিয়ে যায় ।
তুই ওই পাখীরে বোল ধরায়ে
মন বেড়ি দিলিরে পায় ।
- প্রফুল্লরঞ্জন
৬। আমার সোনার ময়না পাখিরে
ও তুই উড়ু উড়ু করিস কেন এতো সুখে থাকিরে ।
- প্রফুল্লরঞ্জন
৭। আমার পোষ মানা সেই শ্যামা পাখি
সইরে সে যে শিকলি কেটেছে ।
- প্রফুল্লরঞ্জন
৮। প্রেমের আবেশে ভুলে সই
বড় আশা সুখে পুষেছিলাম মায়াবি এক পাখি
শিকল কেটে উড়ে গেছে দিয়ে আমায় ফাকি ।
- প্রফুল্লরঞ্জন
৯। শিকলি কেটে গেলি পাখি এলি না খাঁচায় ।
বাটি ভরে খাবার দিব রে পাখি , ফিরে আয় ফিরে আয় রে ।
পরানের সেই দরদ ভুলে, গেলি কোন ফাঁকে দরজা খুলে ,
আমার শিখানো বোল গেলি ভুলে পড়ে কার মায়ায় ।
-বিজয় সরকার ।
(এই পোস্টটির জন্য আমি 'সুরঞ্জন রায় , সহকারী অধ্যাপক , শহীদ আব্দুস সালাম ডিগ্রী কলেজ , কালিয়া নড়াইল'
এর নিকট আন্তরিক কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি । )
আমার গহীন জলের নদী
আমি তোমার জলে ভেসে রইলাম জনম অবধি।।
ও ভাই তোমার বানে ভেসে গেল আমার বাঁধা ঘর
আমি চরে এসে বস্লাম রে ভাই ভাসালে সে চর।
এখন সব হারিয়ে তোমার জলে রে আমি ভাসি নিরবধি।।
ঘর ভাঙিলে ঘর পাব ভাই ভাঙ্লে কেন মন
ও ভাই হারালে আর পাওয়া না যায় মনেরি রতন।
ও ভাই জোয়ারে মন ফেরে না আর রে ও সে ভাটিতে হারায় যদি।।
তুমি যখন ভাঙ রে নদী (ভাঙ যখন কূল রে নদী) ভাঙ একই ধার
আর মন যখন ভাঙ রে নদী দুই কূল ভাঙ তার
ও ভাই চর পড়ে না মনের কূলে রে
ও সে একবার সে ভাঙে যদি, ও ভাই একবার সে ভাঙে যদি।।