Wednesday, September 26, 2018

জুডোর ইতিহাস (Timeline)

১৫৩২      জুজুৎসুর অন্যতম পূর্বসূরি Takenouchi-rye সৃষ্টি হয়।

১৮৬০     এর ২৮ অক্টোবর জিগারো কানো Mikage (জাপানের একটি স্থান) জন্মগ্রহণ করেন।

১৮৮২      জিগারো কানো Eisho-ji মন্দির প্রাঙ্গণে Kodokan Judo স্থাপন করেন।

১৮৮৪      Kodokan এর বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানে মার্শাল আর্টের ঐতিহ্যবাহী ধারা Gantanshiki,                              Kagamibiraki shiki, Kangeiko, Tsukinami shiai ও Kohaku shiai অন্তর্ভুক্ত হয়। এ সময়                          থেকে ১৮৮৭   সাল এর মধ্যে Nage no kata ও Katame no Kata সৃষ্টি করা হয়।

১৮৮৭       এ সালে জুডোর তিনটি কাতা সৃষ্টি করা হয়; কাতা তিনটি হল Jo no Kata, Go no Kata ও                         Itsutsu no Kata

১৮৯৫       Gokyo no Waza কাতা সৃজিত হয়।

১৯৩০        প্রথম সমগ্র জাপান জুডো প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

১৯৩৮      জিগারো কানো ১২তম অলিম্পক টোকিওতে আয়োজনের প্রস্তাব নিয়ে আন্তর্জাতিক                           অলিম্পিক কমিটির মিটিং যোগদান করতে কায়রোতে যান।  ওখান থেকে Hikawamaru                        জাহাজে করে ফেরার সময় তিঁনি নিউমোনিয়া আক্রান্ত হন ও ৪মে জাহাজেই পরলোক                          গমন করেন।

১৯৪৫         দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এ ক্রান্তিকালে স্কুল কলেজ ও ইনিস্টিটিউটগুলোতে সকল ধরনের                              মার্শাল  আর্ট চর্চা নিষিদ্ধ করা হয়।

১৯৪৮        দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে প্রথম সমগ্র জাপান জুডো প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

১৯৪৯        সমগ্র জাপান জুডো ফেডারেশন গঠিত হয়।

১৯৫০       জুডোর উপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।

১৯৫১        আন্তর্জাতিক জুডো ফেডারেশন যাত্রা শুরু করে।

১৯৫২       সমগ্র জাপান জুডো ফেডারেশন ও আন্তর্জাতিক জুডো ফেডারেশন সংযুক্ত হয় ও                                কোডোকানের প্রেসিডেন্ট Risei Kano আন্তর্জাতিক জুডো ফেডারেশন এর প্রেসিডেন্টের                       দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

১৯৫৬       একুশটি দেশের অংশগ্রহণে টোকিওতে প্রথম বিশ্ব জুডো প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

১৯৬৪       অবশেষে জুডো অলিম্পকে জায়গা করে নেয় (১৮তম অলিম্পক, টোকিও)। এই                                 অলিম্পকে তিনটি ওজন শ্রেনী ( Lightweight,  middleweight & heavyweight) ও  একটি                      উন্মুক্ত শ্রেনীর আওতায় প্রতিযোগিতা হয়। এটাই প্রথম আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা যেখানে                     এ   ধরনের ক্যাটাগরি ব্যাবহার করা হয়।

১৯৬৭        আন্তর্জাতিক জুডো ফেডারেশন জুডো  খেলার নিয়মকানুন প্রনয়ন করে।

১৯৭৬       মন্ট্রিয়ল অলিম্পকে Koka কে সর্বপ্রথম জুডো খেলার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

১৯৭৯         প্যারিসে অনুষ্ঠিত ১১তম বিশ্ব জুডো প্রতিযোগিতায় প্রথমবারের মত সাতটি ওজনশ্রেনী (                     -৬০, -৬৫, -৭১, -৭৮, -৮৬, -৯৫ ও + ৯৫ কেজি ) ও  একটি উন্মুক্ত ওজনশ্রেনীতে (৯৫+                          কেজি) খেলা হয়।

১৯৮৮        সিউল অলিম্পিকে উন্মুক্ত ওজনশ্রেনী বাদ দেওয়া হয় ও একটি নারীদের জুডো প্রদর্শনীর                     হয়।

১৯৯৮       কলম্বিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব যুব প্রতিযোগিতা সম্পূর্ণ নতুন ওজন শ্রেনীতে ( বালক: - ৬০,                          -৬৬, -৭৩, - ৮১, - ৯০, -১০০, +১০০ কেজি,  বালিকা: -৪৮, -৫২, - ৫৭, - ৬৩, - ৭০, - ৭৮                       + ৭৮ কেজি)  খেলা পরিচালিত হয়।

২০১১        প্রথমবারের মত ২৮ অক্টোবর (জুডোর প্রতিষ্ঠাতা জিগারো কানোর জন্মদিন) বিশ্ব জুডো                       দিবস IJF এর সকল সদস্য দেশে পালিত হয় ও প্রতিবছর দিবসটি পালনের সিদ্বান্ত্ব নেওয়া                     হয়।

২০১২       লন্ডন অলিম্পকের পর জুডো অলিম্পকের C Catagory র  ইভেন্ট হিসেবে উন্নিত হয়।

২০১৬      অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে দিয়ে রিও অলিম্পকে ১৩৬ দেশের মোট ৩৯০জন জুডোকা                  অংশগ্রহণ করে।



References: 

1. Kawamura, T., & Daigo, T. (2000). Kodokan New Japanese-English Dictionary of Judo. Tokyo, Japan: The Foundation of Kodokan Judo Institute.  pp. 142-143. 


Wednesday, September 19, 2018

Tuesday, September 18, 2018

জুডো বেল্টের ধারনা ও ক্রমবিকাশ (প্রথম পর্ব)

ড. জিগারো কানো জুডো প্রচলন করার আগে প্রচলিত মার্শাল আর্টে কোন কিউ ও ড্যান ধারনা প্রচলিত ছিল না। তবে প্রশিক্ষণার্থীদের সার্টিফিকেট বা অন্য কিছু দিয়ে তাদের দক্ষতার স্বীকৃতি দেওয়া হত। কানোই সর্বপ্রথম দক্ষতা অনুযায়ী মর্যাদার ক্রমবিন্যাস বা Rank System চালু করেন এবং তাঁর দুই বর্ষীয়ান শিষ্য Shiro Saigo ও Tsunijino Tomita কে ১৮৮৩ সালে ব্লাকবেল্ট প্রথম ড্যান প্রদান করেন। আশ্চর্যজনকভাবে সত্য যে এর পূর্বে ব্লাকবেল্ট (প্রশিক্ষক স্তর) ও অন্য বেল্টের মধ্যে বাহ্যিকভাবে পৃথকীকৃত কোন চিহ্ন ছিল না। কানো ১৮৮৬ সালে প্রশিক্ষণার্থীদের দুই ভাবে ভাগ করেন, ১) যারা ব্লাকবেল্ট অর্জন করেছে ও এদের সমন্বিতভাবে Yudansha নামে অভিধা দেন। ২) যারা এখনো ব্লাকবেল্ট অর্জনের পথে আছে ও এদের Mudansha নামে অভিহিত করেন।


Picture: Kimono


তখনো পর্যন্ত আধুনিক জুডো গি (পোশাক) ও বেল্টের ধারনা কানোর মাথায় আসেনি। জুডোকারা তখন Kimono নামে পোশাক ও প্রশস্ত বেল্ট কোমরে পরে প্রাক্টিস করত। ১৯০৭ সালে কানো আধুনিক জুডো গি ও বেল্ট প্রচলন করেন। কিন্তু তখনো শুধুমাত্র সাদা ও কালো বেল্ট ছাড়া অন্যবেল্টের পরা শুরু হয়নি। জুডোর এ সাদা পোশাক নিরহংকারীতা, প্রকৃতিজাত ভারসাম্যাবস্থা ও পবিত্রতা নির্দেশ করে যাতে কোন সামাজিক স্তরবিন্যাসের চিহ্ন নাই, সবাই সমান। সাদা বেল্টের সাথে কালো বেল্ট বৈপরীত্যের মেরু বা In and Yo কে প্রতিনিধিত্ব করে। ছাত্ররা শূন্য হতে শুরু করে ও জ্ঞান দ্বারা পূর্ণ হয়।


Picture: In and Yo 
(To understand the real meaning please search on the internet ) 
১৯৩০ সালের দিকে উচ্চতর দক্ষতা সম্পন্ন ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম ডিগ্রি ব্লাকবেল্টদের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য কানো সাদা ও লাল রঙের প্যানেলের সমন্বয়ে একটি বিশেষ বেল্ট প্রচলন করেন যাকে Kohaku Obi বলা হয়। এ Kohaku Obi সাধারনত বিশেষ অনুষ্ঠানে পরা হয়। ১৯৪৩ সালে কোডকান ৯ম ও ১০ম ডিগ্রি ব্লাকবেল্টদের জন্য লালবেল্ট চালু করে। তবে এটি ঐচ্ছিক, ঐ মর্যাদার কেউ চাইলে এটি পরতে পারে। জুডোকার মর্যাদা শুধ্যমাত্র ১০ম ডিগ্রিতেই সীমাবদ্ধ নয়। কানোর ভাষায় কেউ যদি ১০ম ডিগ্রি অর্জন করে তাহলে তাকে একাদশ ডিগ্রিতে উন্নীত না করার কোন কারন নেই। উল্লেখ্য এখন পর্যন্ত ১৫ জন ১০ম ডিগ্রি পেয়েছেন।

Picture: Kohaku Obi

জাপানের বাইরে যখন জুডো প্রচলন লাভ করে তখনই মূলত Mudansha দের জন্য বিভিন্ন রঙের বেল্টের ধারনা শুরু হয়। আর এজন্য সকলে Mikonosuke Kawaishi কে কৃতিত্ব দিয়ে থাকেন। তিঁনি যখন ১৯৩৫ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে জুডো শেখাতে শুরু করেন তখন ভাবেন যে এ পাশ্চাত্যে যদি দক্ষতা অনুযায়ী শ্রেনী বোঝাতে বিভিন্ন বেল্ট দেওয়া হয় তবে শিক্ষার্থীরা এর প্রতি বেশী আকৃষ্ট হবে ও মনোযোগ ধরে রাখবে ও স্বীকৃতিতে প্রেষণা বাড়বে। আর এ বেল্টের রঙগুলো হল সাদা, হলুদ, কমলা, সবুজ, নীল ও বাদামী।

Picture: Mikonosuke Kawaishi 
(13 August 1899 – 30 January 1969) 

জুডোর এ পোশাক ও বেল্টের ধারনা পরবর্তীতে বিভিন্ন ঘরনার মার্শাল আর্ট যেমন কারাতে, Aikido তে ছডিয়ে পড়ে ও এগুলো তাঁরা নিজেদের সুবিধামত সংস্কার ও পরিমার্জন করে ব্যবহার করতে শুরু করে।
মার্শাল আর্টের ব্লাকবেল্ট সম্পর্কে নানা কিংবদন্তী চালু রয়েছে।(মার্শাল আর্টের ইতিহাসের তুলনায় এ ব্লাকবেল্টের ইতিহাস একেবারেই নতুন।) প্রচলিত মিথের মধ্যে সবচেয়ে বেশী যেটা শোনা যায় তা হল শিক্ষার্থীরা ঐতিহ্যগতভাবে সাদা বেল্টেই শুরু করত, কালপরিক্রমায় তা ময়লা হয়ে ধূসর হয়ে বাদামী রঙে পরিনত হত। তারপর একসময় আরো আস্তারণ পড়ে কালো রঙে রূপান্তরিত হত। আর এ রঙই তাঁর দীর্ঘকালের সাধনা ও দক্ষতার ধ্বজা হিসেবে দেখা হত। এ লোককথা কতটুকু সত্য তা নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি তবে একথা সত্য যে প্রাচীন মার্শাল আর্টে রঙিন বেল্ট কোনদিনই প্রচলিত ছিল না।
Dr. David Matsumoto তার An Introduction to Kodokan History and Philosophy গ্রন্থে বলেছেন যে সাদা পোশাক ও বেল্ট ব্যবহারের দুটি ঐতিহাসিক ও প্রথাগত মূল্যবোধ জড়িত থাকতে পারে। প্রথমত জাপানী সমাজে সাদা রঙকে পবিত্রতা ও শুচিতার প্রতীক বলে মনে করা হয়। এজন্য সাদা রঙ চিরদিনই তাঁদের কাছে বিশেষ প্রধান্য পেয়ে থাকে। তাই তারা নবীন শিক্ষার্থীদের সরলতা ও নিষ্পাপ অন্তর বুঝাতে সাদা রঙ ব্যবহার করতে পারে।
কালোবেল্ট সম্পর্কে একটি সূত্রহীন কিংবদন্তী বলে যে ড. জিগারো কানো জাপানে প্রচলিত হাইস্কুল সাঁতার প্রতিযোগিতা থেকে এর ধারনা নেন; যেখানে দক্ষ প্রতিযোগীরা কোমরে কালো Ribbon ও নবীন প্রতিযোগীরা সাদা Ribbon পরতো ফলে তাদের সহজে পৃথক করা যেত। এই ঐতিহ্যই কানো কোডকানে নিয়ে আসেন।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে উচ্চস্তরের ব্লাকবেল্টরা কেন সাদা ও লাল রঙের স্ট্রাইপ দেওয়া বেল্ট পরেন? Meik Skoss নামের একজন বিখ্যাত মার্শাল আর্ট ঐতিহাসিক বলেছেন যে এর পেছনেও ইতিহাসের দায়বন্ধতা রয়েছে। জাপানীরা সাধারনত দল গঠনের সময় নিজেদের লাল ও সাদা রঙে বিভক্ত করে থাকে। এর পেছনে ইতিহাস হচ্ছে প্রাচীন জাপান সাম্রাজ্যে Genpei War (1180–1185) নামে Genji ও Heiki সম্প্রদায়ের মধ্যে যে বিখ্যাত যুদ্ধ হয় তাতে গেঞ্জি সৈন্যরা সাদা রঙের নিশান ও Heiki সৈন্যরা লাল রঙের নিশান ব্যবহার করেছিল যাতে তাদের সহজে পৃথক করা যায়।
জাপানের সামাজিক স্তরবিন্যাস খুবই স্পর্শকাতর ও একশ্রেণীর লোকজন অন্যশ্রেণীর সাথে ভাবের আদানপ্রদানে খুবই সতর্ক থাকে। জাপানী শাসনব্যাবস্থার Heian Period (794 to 1185) থেকে মর্যাদার এ শ্রেনীকরণ সমাজের সর্বক্ষেত্রে বিস্তার লাভ করে। সে সময়ে আদালতে পদমর্যাদা অনুসারে নানা রঙের ক্যাপ করার রীতি ছিল যা কর্তাব্যক্তির কার্যক্ষমতা নির্দেশ করত ।  Skoss এর মতে এসব প্রশাসনিক ও সামাজিক ঐতিহ্য জুডো বেল্টের রঙ নির্ধারণে ভূমিকা রেখেছে।

References: 
1. Ohlenkamp, N. (2007). The Judo Rank System -Belts.  Retrieved from https://judoinfo.com/obi/  Visited: 18 September 2018
2. Cunningham, D. (2013). Belt Colours and Ranking Systems. Retrieved from
https://web.archive.org/web/20130928214532/http://www.e-budokai.com/articles/belts.htm    
Visited: 18 September 2018