Saturday, October 21, 2017

মুতার স্বাধীনতা

বৃষ্টির ভোর শাহবাগ চা এর দোকানে ধোয়া ওঠা চা এর দিয়ে তাকিয়ে কিন্তু ভাংতি টাকা নাই। 
এমনিতে প্রমের বৃষ্টি ছাতি মানে না তার উপর বাসও আসে না। এলো টাইটেনিক, উঠলাম, কারওয়ান বাজার উপসাগর পার হলাম, শুনলাম কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া নাকি মহাসাগর হয়ে গেছে তাই ওখান দিয়ে এ ছোটখাটো জাহাজ পার হতে পারবে না। আগত্য নামলাম আগারগাঁও। চারপাশে কেউ নাই, দূরে দুই ট্রাফিক পুলিশ দাড়িয়ে দাড়িয়ে বিড়ি ফুঁকছে, এদিকে আমার আসছে মুত ! মেশিন বের করে চারপাশে ফায়ার করে দিলাম। কিসের মানবাধিকার ঘোষনা ? কিসের জাতিসংঘের অর্থনৈতিক সামাজিক মুক্তির সনদ ? স্বাধীন ভাবে মুতার স্বাধীনতার চেয়ে আর বড় কোন স্বাধীনতা আছে নাকি। এই যে আগারগাঁও চৌরাস্তার মোড়ে মুক্ত স্বাধীনভাবে মুত্র বিসর্জন করে মানবাধিকারের যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলাম তা এক দিন বিশ্ব মুত্র স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হবে, হাজার হাজার NGO মুত্র বিসর্জন নিয়ে কাজ করবে, Nature কিংবা Climatic Change সাময়িকিতে এ নিয়ে গবেষনা প্রবন্ধ প্রকাশিত হবে, Stanford University মুত্র বিসর্জনকে আরামদায়ক করতে নতুন প্রযুক্তি সৃষ্টি করবে আর আমি বিশ্ব শান্তিতে সবচেয়ে বেশী অবদান রাখার জন্য পাবো ট্রিপল নোবেল।

Saturday, October 14, 2017

সোনার বাংলা জ্যাম সামলা।

 
এতোগুলো ফ্লাইওভার করে কি লাভ হল জ্যাম তো কমেই না বরং বাড়ছে। ৭.৩০ এ মিরপুর থেকে বাসে উঠে ৯.৫০ এ তালতলা জ্যামে আটকে আছি। ২.৩ঘন্টায় ৫কি. মি. । কি গতি! ফ্লাইওভার তৈরির ওই টাকা জনগনের বালকাটা প্রকল্পে অর্থায়ন করলে বরং পাব্লিকের স্বাস্থ্য ভালো হতো। এবং কনডম বিতরন কর্মসূচি নিলে ওই সব কমনসেন্স বিহীন দুর্নীতিবাজ নগর পরিকল্পনাবিদের জন্ম হতো না ফলে এই জ্যামে আটকে থাকতে হতো না। 
বাস ড্রাইভার কোন সাহসে ট্রাফিক সার্জেন্টকে মামা কয়? 
পাশের যাত্রী কয়, মাল খায় ভাই মাল খায়।
আর ৩য় শ্রেনীর চাকরী করে প্রাইভেট গাড়ী চড়ে ওরা?
ওরাও মাল খায় ভাই মাল খায়।
আরে দু:র! ওরা মাল খায় আর আমি নেশা করি।
ভাই কি মাতাল?
আরে মিয়া মাতাল দেইখাইতো বলতেছি, রামপাল আর রূপপুরে পরিবেশের ক্ষতি হয় না ক্ষতি হয় না, ক্ষতি হয় ছেলেমেয়েরা একটু চুমু খেলে আর বাইরে ব্যায়াম করতে বেরলে ! হে হে!
যা শালা! নেশাটা আজ একটু বেশি হয়ে গেছে! কি বলে ফেললাম। আমার আবার গোয়ার কাপড় নাই কিন্তু মাথায় ঘোমটা দিয়ে চলতে হয়। তাই দেশ, রাজনীতি নিয়ে কিছু লিখি না।

আদর্শ ভোটা্র

নির্দিষ্ট বয়সের পরে ভোটার হওয়ার ধারণাটা আমার ঠিক পছন্দ হয় না। বয়সতো ছাগলেরও হয় গরুরও হয়, তাই বলে নির্দিষ্ট বয়সের পরে ভোটার হবে এমন কোন কথা নাই। ভোটার হতে হলে তাকে রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, বিশ্বায়ন, ভাষাগতসহ নির্দিষ্ট পর্যায়ের ও গুণের জ্ঞান অর্জন করতে হবে ও পরীক্ষা দিয়ে পাস করতে হবে তাহলেই সে ভোটার হিসেবে গন্য হবে। আগল পাগল ছাগলকে কোন জ্ঞান, প্রশিক্ষণ ছাড়া ভোটাধিকার দেওয়া চলবে না। ভোটার হওয়ার জন্য SSC পরীক্ষার মত পাবলিক পরীক্ষা হওয়া উচিত কিংবা BCS পরীক্ষার মতো ধাপে ধাপে যোগ্যতা যাচাই করে তবেই ভোটাধিকার দেওয়া যেতে পারে। মাথায় মাল ও কর্মে নিপুণতা থাকলে তাবেই ভোটার হবে।
দেশে দুই ধরনের মানুষ থাকবে - ১) সাধারণ মানুষ, ২) ভোটার। সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারবে না, তারা উৎপাদনের সাথে জড়িত থাকবে, তা সন্তান, বেলুন, খাদ্য কিংবা যাই হোক না কেন। আর ভোটাররা তাদের তীক্ষ্ণ চিন্তাশক্তি, বিদ্যা বুদ্ধি দ্বারা দেশের অভ্যন্তরীণ নীতিসহ সব ঠিক করবে। আর সাধারন মানুষ তখন বাৎসায়ন সূত্র প্রাকটিস করবে। রাত অনেক হল আপনারা বাৎসায়ন সূত্র প্রাকটিস করুন, আমি ঘুমাই।

রুমের সামনে ব্রা !

ঘুম থেকে উঠে দেখি রুমের সামনে কে যেন ৭২ ফ্রন্টের ব্রা ঝুলিয়ে রেখে গেছে। কোন শালা রে ? ৩৬ ফ্রন্টের হলেও একটা কথা থাকে, ডাইরেক ৭২ ফ্রন্ট ! 
ওয়াশরুম পর্যন্ত যেতে যেতে দেখি অনান্য রুমের সামনেও ঝুলছে। পরে পর্যবেক্ষণ আর অভিজ্ঞতার মাধ্যমে বুঝলাম এগুলো টিনারই ব্রা। কারন টিনার সাথে আমার গোপন অভিসার ঘটে চারবছর পর পর। জার্মানি যখন সাত সাত বার ব্রাজিলের ব্রা খুলে নিয়ে গেল কই তখন তো প্রতিবাদ করি নাই বরং দুই হালি বার কেন খুলে নাই ভেবে দুঃখ পেয়েছিলাম। দিত আর্জেন্টিনা ওরূপে টিনার ব্রার দিকে হাত, হাত কেটে নিয়ে আসতাম না। যাইহোক আবার আসিতেছে ২০১৮ সাল তখন রুমের সামনের ব্রাগুলি ব্রাজিল আর টিনা গয়নাগাটি পরে আর্জেন্টিনায় পরিনত হবে; সে পর্যন্ত ওরা ঝুলিতেই থাকুক।

বলধা গার্ডেনঃ প্রেম ও বৃক্ষ

বলধা গার্ডেনে ঢুকে দেখি গাছে বাদুর ঝুলে আছে আর ফাকে ফাকে জুটি বসে আছে আর এক জুটি পুকুর পাড়ে মাছ ধরা দেখছে। জায়গাটা দারুন পাখির ডাক আছে, সবুজের সমারোহ আছে, পদ্মফুল আছে, আর্কিড আছে, মাছ আছে, সুন্দর ছেলেদের সাথে সুন্দরী মেয়ে আছে, মোটের উপর জায়গাটা বেশ। রবীন্দ্রনাথ এখনকার যে জয় হাউজে বসে ক্যামেলিয়া কবিতাটি লিখেছেন তার দেওয়ালে একলা কনিক নামে অন্য এক প্রেমবিদ" প্রেম করা মানে অন্যের বউকে পাহারা দেওয়া" লিখে স্মরনীয় হতে চেয়েছেন।
ওয়াশরুমের গিয়ে দেখি লেখা, হোটেল ০১৭২************। " দিলাম ফোন।
- হ্যালো ভাই
- ভাই লেখা দেখলাম হোটেল
- হ্যা ভাই
- কি সু্যোগ সুবিধা আছে ভাই ওখানে
- গার্লফ্রেন্ড নিয়ে আসবেন, না হলে এমনিই আসবেন যা চান পাবেন
- তাই নাকি
- ওই জায়গায় এসে ফোন দিয়েন
অনেকদূর হেটে আসছি শরীর আর চলছে না, সরোবরে কাকেরা পানি খাচ্ছে, পাশে জুটিরা প্রেম করছে আর আমি কাটা সাইকাস ( Cycas Microzamia) এর পাশে শুয়ে একটু দম দিয়ে নিচ্ছি। গাছে পাখির এমনন ডাক অনেকদিন শুনিনি, বেশ মধুর লাগছে।
ভিতরে নরেন্দ্রনারায়ণ রায় চৌধুরীর সমাধির গায়ে লেখা রয়েছে " Lord grant me infinite love and light and end endless journey. "
আর অপর পাশের লেখার শেষ লাইন " Drop me a flower! - goodbye! মনটা কেমন যেন হয়ে গেল। গাছ থেকে একটা ফুল নিয়ে সমাধিতে শ্রদ্ধা জানালাম।
তিনটি চালাঘরের ক্যাকটাস, অর্কিড সংগ্রহ মন ভরিয়ে দিয়েছে, ইয়া বড় বড় জায়ান্ট ক্যাকটাস! আর গাছের নাম ভুতনাগ/ভুতনাগিনী , বিচিত্রবকুল, রসুনসুদি। ব্যাস্ত ঢাকায় একটু তৃপ্তি সুখ এনে দিল এই সবুজের সজীবতা।

কন্যা শিশু যেন এক অভিশাপ !

রাত বারোটা ফোন এলো গেলাম ঢাকা মেডিকেলে, আত্মীয়ের স্ত্রী কন্যা সন্তান প্রসব করেছেন। কি শীতল অভিনন্দন ! সবার মুখ কালো, ভারী ! কেউ যেন খুশী নয় ! যেন এক অভিশাপ নেমে এসেছে ! হায়রে কন্যা সন্তান ! যে নারীকে নিয়ে হাজার হাজার পৃষ্ঠা লেখা হয়, প্রিয়তমা সাজানো হয়, সাহিত্য ভরে ওঠে উপমায় তাকেই স্বাগত জানানো হয় না পৃথিবীতে ! এক অবাঞ্চিত অনাদরে পৃথিবীতে এল এই মানব সন্তান । 
নারী, কন্যাশিশু এই আধুনিক সমাজেও যেন এক বিভিষিকার নাম !

"লিপিস্টিক নয় জ্ঞান"

বেগম রোকেয়ার যে বছর জন্ম হয় সে বছর তার স্বামী চাকরিতে যোগদান করেন। আমি তো মাত্র ছাত্র সুতরাং আমার স্ত্রীর তো এখনো জন্মই হয় নি। কিন্তু না ; আমি বিয়ে করবো PhD ডিগ্রিধারী মেয়ে, আমার সমবয়সী কিংবা বড়ও হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বড় ভাইকে দেখেছি বিয়ে করেছেন ইন্টারমিডিয়েট পড়ছে বা হাইস্কুলে পড়ছে এমন মেয়ে। এখানে কাজ করেছে কচি নরম মাংসের লোভ। মাংসে বিতৃষ্ণা আসতেই শুরু হয়েছে নতুন জ্বালা, বউ ভালো লাগে না, মতের মিল হয় না, কথা বুঝে না, কিছু শেয়ার করতে পারি না ইত্যাদি।
একে বলে ব্যাক্তিত্বের সংঘাত। যে আমার পথে না হেটেছে, আমার খেলা না খেলেছে, আমার পরিবেশে না থেকেছে তার সাথে আমি কি করে শেয়ার করতে পারি আনন্দ, কিংবা তথ্য ? ফলে বিয়েটা হয়ে যায় বাসে/লঞ্চে যেমন লেখা থাকে "এলাহি ভরসা" তেমনি। বউ হয়ে ওঠে দাসী আর স্বামী হুকুমওয়ালা আর তাছাড়া যদি বাচ্চাকাচ্চা হয় তারাই হয় স্বামীস্ত্রীর মধ্যে সেতুবন্ধন আর কোন মানসিক বন্ধন ওদের মধ্যে থাকে না।
মাংস নয় মানসিক সুকুমারবৃত্তিই বড় সৌন্দর্য। লিপিস্টিক, উচুবুকের ঢেউ বড় ক্ষনস্থায়ী কিন্তু অন্তর্জগতের জ্ঞান, বিদ্যা অর্জনের সাধনা চিরস্থায়ী, তা ক্রমসোমের মাধ্যমে সঞ্চারিত হবে পরবর্তী বংশধারায়। তাই মাংস নয় জ্ঞানই হবে আমার অর্ধাঙ্গের সৌন্দর্য।

'পর্নোগ্রাফিতে পুরুষতান্ত্রিকতা'

পর্নোগ্রাফি পুরুষতান্ত্রিকতার চরম বহিঃপ্রকাশ । নারী প্রত্যেকটা গহ্বর পুরুষের কাছে যোনি সদৃশ্য। বংশধারা উৎপাদনের সময় সে নারীকে কারো সাথে শেয়ার করবে না কিন্তু ভোগের সময় নারীকে সে ভাবছে মাংসের পিস; ভাগ ভাগ করে ভোগ করছে তারা এভাবেই দেখানো হচ্ছে পর্নোগ্রাফিতে । আর্থিক সচ্ছলতার অভাবে কিংবা সামাজিক বিধির নিষেধের কারনে অপূর্ণ অবচেতন মনের চাওয়া পর্নোগ্রাফিতে পাচ্ছে বাস্তব রূপ।
আর সদ্য নিন্মাংগে চুল গজানো কিশোর কিংবা
টেকো মাজাভাংগা বুড়ো সবাই প্রভাবিত হচ্ছে সেলুলয়েড ফিতার ক্রিয়া দ্বারা। ফলে নারীর প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন বাড়ছে, বাড়ছে ধর্ষণ আর হত্যা।
নারী অধিকারের রিও সম্মেলন কিংবা সিডো সনদ কিংবা জাতিসংঘের ঘোষনাপত্র শুধু কাগুজে লেখার কঝকানিতে পরিনত হচ্ছে। বানিজ্যের এ যুগে প্রেম যেমন পন্য, সংগম তেমনি সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। ফলে কমছে পারিবারিক বন্ধন।
রোকেয়া, ওলস্টোক্রাফট, কেইট মিলেটের নাম নারীরাই উচ্চারণ করে না পুরুষের কি দোষ। পন্য বিক্রির উদেশ্যে বুর্জোয়া সম্প্রদায় নারীকে ব্যবহার করেছে শুধুই ভোগ্যবস্তু হিসেবে আর কিছু না। আর এই পর্নোগ্রাফি ভোগবাদেই ফলাফল।
পুরুষতন্ত্র এমনি জিনিস যা চিত্রাঙ্গদাকে পর্যন্ত অর্জুনের বিছানায় নিয়ে ফেলেছে, আইডাকে (টেনিসনের প্রিন্সেস গ্রন্থের নায়িকা) পর্যন্ত বিয়ে দিয়ে ছেড়েছে।