Sunday, May 13, 2018

জুডো কাতার ইতিহাস (৩)

There is no art without originality;
There is no originality without personality.
                                             - R. ALDINGTON


জুডোর প্রতিষ্ঠাতা Jigaro Kano (জিগারো কানো) অত্যন্ত  দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন। প্রথম জীবনে তিনি জুজুৎসুতে আসক্ত ছিলেন এবং কৈশোরে Tenjin-shin'yo Ryu এর জুজুৎসু শিক্ষার্থী ছিলেন। কয়েকবছর পর তিনি যখন সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক তখন Kito Ryu এর শিষ্যত্ব বরণ করেন।  কানো লক্ষ্য করেন যে ঐ সকল জুজুৎসু যুদ্ধজয় নির্ভর, চর্চা করা খুবই কষ্টকর এবং সঠিক ভাবে পরিচালনা না করতে পারলে মারাত্মক ইনজুরি সম্ভাবনা থাকত  এবং প্রতিপক্ষের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতো। তাই তিনি সাধারন মানুষের কথা বিবেচনা করে শুধুমাত্র কার্যকর ও সহজে করা যায় এমন সব টেকনিকের সমন্বয়ে একটা নতুন স্টাইল/ধারা দাড় করানোর চেষ্ঠা করলেন, যা একদিকে আত্মরক্ষার কৌশল অন্যদিকে শরীরকে সুস্থ সবল নমমনীয় রাখতে সহায়তা করবে।  এছাড়াও তিনি প্রচলিত জুজুৎসুর অপব্যাবহারে চিন্তিত ছিলেন ও চর্চাকারীদের কিছু মূল্যবোধ, নৈতিকতার সাথে একমত হতে পারছিলেন না। ফলে তিনি নতুন ধারা প্রবর্তনে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।




Picture: Jigoro Kano, the founder of judo. 

Tenjin-shin'yo Ryu ঘরনা থেকে তিনি Katame-waza (Grapping Techniques) যেমন Hon-kesa gatame, Nami-juji-jime, Ude-garami আর Ate-waza (Striking Techniques) যেমন Age-oshi, Yoko-uchi, Ushiro-ate ইত্যাদি ধার ও উন্নতি করেন।অন্যদিকে Kito Ryu স্টাইল থেকে তিনি সাধারন সুস্থতার ব্যায়াম এবং Nage-waza (Throwing Techniques) যেমন Tai-otoshi, Uki-koshi, Hiza-guruma, Tomae-nage, Uki-waza ইত্যাদি ধার করেন।  কানো প্রচলিত ধ্রুপদী মার্শাল আর্টের কাতাগুলো অধ্যয়ন করে তার সাথে নিজস্ব চিন্তার মিশেল ঘটিয়ে যেগুলো গতিবিদ্যা ও প্রাকৃতিক নিয়মের সাথে বেশী সামঞ্জস্যপূর্ণ সেগুলো গ্রহন করেন।

Chikara Kurabe এর ভূমিতে কুপোকাত করার কৌশল বা Katame-waza যা তখন Sumo (সুমো) এর মাধ্যমে প্রচলিত ছিল তার উপর গবেষনার জ্ঞান তার কোডকান জুডো তৈরিতে সহায়তা করে এবং এ অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তিনি জুডোর মূলনীতি "The Principle of Maximum Efficiency" তত্ত্বে উপনীত হন; যাকে তিনি বর্ননা করেছেন শরীর ও মনের সর্বোচচ সক্ষমতায় বের করে আনা এবং ব্যাবহার করা।

১৮৮২ সালে কানো তাঁর বুদ্ধিজাত সন্তান, সংশোধিত জুজুৎসু, সর্বসমক্ষে নিয়ে এলেন এবং নাম দিলেন Judo (জুডো)। Jikishin Ryu ঘরনারও জুডো নামে একটি ধারা শতাব্দীকাল থেকেই প্রচলিত ছিল। এই দুই জুডো যাতে বিভ্রান্তি না ছড়ায় তাই তিনি Eishoji নামকে মন্দিরে কোডকান (জুডো শিক্ষার প্রতিষ্ঠান) স্থাপন করলেন। আর এভাবেই কোডকান জুডো স্থাপিত হল।

প্রকৃত অর্থে কানো প্রচলিত জুজুৎসু থেকেই প্রাথমিক শিক্ষাপ্রনালী, ব্যায়াম, কৌশল, গোপন কৌশল, মূল্যবোধ, বাধা নিষেধগুলো গ্রহণ করেন। শুধু প্রয়োজন অনুসারে তিনি সেগুলোর সংযোজন, বিয়োজন, সংশোধন করেন।  কানো জুডো সৃষ্টির জন্য তার পুরানো শিক্ষার ঘরনা Tenjin-shin'yo Ryu ও Kito Ryu এর উপর বিশেষভাবে নির্ভর করেছেন।

কোডকান জুডোর পথ চলেছে ধীরে ধীরে অগ্নুৎপাতের মত নয়।  ইউরোপের রেনেসাঁর মতো ১৮৬৮ সালে জাপানে "The Meiji Restoration" নামে একটি ঘোষনাপত্র জারি হয়,  যা ছিল জাপানের সবচেয়ে বিপ্লবাত্মক সমাজ পরিবর্তনের ডাক। এটি জাপানকে জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প, সাহিত্যে পাশ্চাত্য সভ্যতার সমকক্ষ্য করে তোলে। সকলের জন্য শিক্ষা ছিল এর অন্যতম আহবান।  সম্রাট Meiji নাগরিকদের আদেশ করেন যেখান থেকে পারো জ্ঞান আহরণ কর তা পৃথিবীর যে প্রান্ত থেকে হোক না কেন। এই বুবুক্ষা  নাগরিকদের চারপাশে ছড়িয়ে দেয়।  প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাকে পাশ্চাত্য শিক্ষার আদলে সাজানো হয়; উচ্চশিক্ষায় পাশ্চাত্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেল গ্রহণ করা হয়।  কানো এ সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের সদ্ব্যবহার করেন।  তিনি জুডোর সাথে নীতিশিক্ষা, শারীরিক শিক্ষা,  কঠোর নিয়মকানুন পালন, যোগ করে নতুন মাত্রা যোগ করে শাসকের কাছে পেশ করেন এবং তা Meiji সম্রাটের কাছে শারীরিক শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে অনুমোদন লাভ করে স্কুলে, কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে অনান্য প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ে।  রাজক্ষমতা পক্ষে না থাকলে  জুডোর এ সপ্রসারন  সম্ভব হতো না।

তখন কানো নতুন কাতা সৃষ্টিতে মনোনিবেশ করেন যেমন Ju no Kata, Seiryoku Zen'yo Kukumin Taiiku.  কোডকান তিনটি লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলঃ
১) শারীরিক উন্নতি
২) মন নিয়ন্ত্রন
৩) আত্মরক্ষা ও যুদ্ধজয়।

১৮৮৯ সালে জুডো সম্পর্কে কানো বলেন,
"Judo is the study of techniques with which you may kill if you wish to kill, injure if you wish to injure, subdure if you wish to subdure,  and when attacked, defend yourself. "



Bibliography:


Otaki, T., & Draeger, D. F. (1983). Judo: Formal techniques: A complete guide to Kodokan randori no kata. Shinagawa-ku, Japan: Tuttle Publishing. pp.20-23.



x

No comments:

Post a Comment