Friday, February 16, 2018

ঢাকা বুড়িগঙ্গার তীরে অবস্থিত। ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী। ছোট বেলায় মামার দেওয়ার ট্রান্সলেশন। মামা তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সেই থেকে ঢাকার প্রতি বিশেষ করে পুরান ঢাকার প্রতি আমার সুপ্ত আকর্ষণ। বিকেলে ঠিক দক্ষিন দিকে হাটতে শুরু করলাম, কারাগারের দেওয়াল পেরিয়ে গলি দিয়ে সোজা সামনে। হটাৎ চৈতীর ফোন "ভাইয়া! TSC তে আছি, রিজু বসে বসে পড়ছে, মা বলেছেন ও তিনদিনের মধ্যে বইটা শেষ করতে পারলে মা ওকে আরেকটা বই কিনে দেবে", দেখি এক খেলার মাঠ, ধুলার উড়াউড়ি, দুভাইয়ের মারামারি, মিস করলাম নিজের ছোটভাইকে (ওর সাথে আমিও মারামারি করতাম), বল ছুটে এলো আমার দিকে টুপ করে ধরে ফেললাম, কিছুক্ষণ পরে ওরা বলে "ভাই খেলেন", খেললাম। গ্রামে আমাদের বাড়ির পাশে ছোট মাঠ; সেখানে পিংপং ছাড়া খেলা যেতো না এখানেও দুপাশে দেওয়াল রেখে আমরা সেই পুরানো নিয়ম ছয় মারলে আউট খেলা শুরু করলাম। ব্যাট করার সময় হাত ঘেমে ব্যাট ছুটে গিয়ে লাগলো দেওয়ালে, হাতল নড়বড়ে হয়ে গেল, "ভাই ব্যাটটা আজকে কিনেছি!" বললো ওরা। খেলা শেষ! ছুটলাম আবার সামনে, দেখি এক ফ্যাক্টরি, ঘুরে দেখলাম, কারিগররা বলল এটা TP Belt. যান্ত্রিক কৌশলের দিকে চেয়ে থেকে রাস্তা পেরিয়ে সোজা বুড়িগঙ্গার পাড়ে চলে এলাম। রিজার্ভ নৌকায় দুলতে দুলতে জলে আলোর খেলা, ভেসে ওঠা রঙিন পাড়ের প্রতিচ্ছবি, লঞ্চের হুইসেল, অনেকটা মুভিতে দেখা ইতালি কিংবা ভেনিসের কথা মনে করিয়ে দিল।
ওপারে নেমে কামারের হাপরের বাতাসে কয়লার জ্বলে ওঠা, রাস্তায় জোঁকের তেল আর কলোজিরারা তেলের সুখ্যাতি করে বক্স এর বেজে চলা, বড় বড় জাহাজের মাঝে নিজেকে হারিয়ে বলে ওঠা "এইতো Industrial Revulsion", মোটা মোটা শিকলের ডকইয়র্ডের মাটিতে গড়াগড়ি খাওয়া, সদ্য তৈরি জাহাজের বড় বড় টারবাইনে আলোর ঝলকানি, আবার ঢেউের স্রোতে ভাসা, গরুর ভুড়ি ভাজার গন্ধ নাকে লাগা, বাসে ঘুমানো আর সর্বশেষে রিক্সায়, হলে নামতেই চালকের আবদার "মামা! দশ টাকা বাড়াইয়া দিয়েন।"

No comments:

Post a Comment