Thursday, January 18, 2018

নির্বাণ!

চর্যাপদে আমার একটা প্রিয় পংক্তি হচ্ছে,
"অপনে রচি রচি ভব নির্বাণা।
মিছে লোঅ বন্ধাব অপনা।।
( চর্যা-২২, সরহ পা)
অর্থাৎ প্রত্যেকটা মানুষ  আলাদা আলাদা জিনিসে মজা পায়; প্রত্যেকের কাম্যবস্তু বা নির্বাণ আলাদা।  কারো বা মরুভূমির বেলিড্যান্স ভালো লাগে কারো না মনিপুরী মেয়ের নৃত্য।  কেউ বা কেরু এন্ড কোং কোম্পানির একনিষ্ঠ  ভক্ত কেউবা সদরঘটের বাদামতলীর ফলবাজারের আড়তদার।
কার যে কোথায় প্রথমানন্দ, পরমানন্দ, বিরামানন্দ, অবশেষে সহজানন্দ তা বোঝা দায়।  কেউ বা কুচযুগধারী বালিকায় মুগ্ধ হয়ে বাক্য প্রসব করে বলে,
 "কুচ হতে কত উচ্চ মেরু চুড়া ধরে।
 শিহরে কদম্ব ডরে দাড়িম্ব বিদরে ॥”

কিংবা

"গোলাপি বরণ পীন পয়োধরদ্বয়,
বিকচ কদম্ব শোভা যাতে পরাজয়।
বিরাজে বক্ষের মাঝে নিজ গরিমায়,
স্থানাভাবে ঠেকাঠেকি সদা গায় গায়।"

আর কেউবা সবকিছু ত্যাগ করে তিব্বতে গিয়ে সন্ন্যাসী হয়ে গৌতম বুদ্ধের অনুকরণ করে সুখ লাভ করে।
হায়রে  সুখ!  কত বিচিত্র প্রকারের এ সুখ!
তবে যাই বল,  ভাই ঘন্টাখানেক বিজয় সারনী কিংবা ফার্মগেটে জ্যামে আটকে থাকার পরে হলে এসে চেন খুলে ছেড়ে দেয়ার মত সুখ আর নাই।  (ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক হবে, " এতো সুখ সইব কেমন করে.........)"
আমার ললনা, রসনা, অবধূতী সবই যে এই জাগতিক সুখের সন্ধান করে রে ভাই,  তাই আমি ডোম্বীতেই আটকে রইলাম, কাপালিক হইলাম, নৈরাত্মদেবীর সন্ধান আর পাইলাম না।

No comments:

Post a Comment